পা ছুয়ে সালাম (কদমবুচি ) বৈধ কিনা?

সময়: ১০ মার্চ ২০২০, ৩:৩০ পূর্বাহ্ণ

লেখক:

উৎস: imam.gov.bd

টপিক: 

ট্যাগ: , , ,

লেখক প্রোফাইল 

বড় করুন

ছোট করুন

উত্তরঃ পা ছুঁয়ে সালাম করাকদমবুসি করা বা পায়ে চুমু খাওয়াপদধূলি নেওয়া – এ সবগুলো হচ্ছে মুশরেক জাতি হিন্দুদের অনুকরণে নিকৃষ্ট বিদআ’ত। মূলত কবর মাযার পূজারী আর পীর পূজারীরা মুসলমানদের মাঝে এই কুপ্রথা ঢুকিয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারেএই বেদাতীরা কবর মাযার ও তাদের পীর বুজুর্গদেরকে সেজদাহ পর্যন্ত করে (নাউযুবিল্লাহ)সুতরাং পা ছুঁয়ে সালাম করা এদের কাছে কোন ব্যপারই না। আফসোস ! আজ পর্যন্ত কোনো হিন্দু বা কাফেরকে দেখলামনা মুসলমানদের কোনো কিছু অনুকরণ করতে। মুসলমান জাতি কেনো হিন্দুয়ানি কালচার ফলো করার জন্য এতো দিওয়ানা হবে?

বিঃ দ্রঃ পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলে মাথা কোনো মানুষের সামনে ঝুঁকানো হয়যা শিরক। মুসলমানদের মাথা শুধুমাত্র এক আল্লাহর সামনেই নত হয় – নামাযের রুকু ও সিজদাতেঅন্য কারো জন্য না। সমস্যা হচ্ছেসমাজের অজ্ঞ লোকদেরকে নিয়ে – জানেনা ইসলাম একফোটাক্বুরান হাদীস না জেনেই বড় বড় ফতোয়া ছাড়ে আর নিরিহ বউদেরকে বাধ্য করে এই হারাম কাজ করার জন্য। দেবদাস মার্কা স্বামী খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে থাকে – তার বউকে হারাম কাজে বাধ্য করা হচ্ছেবাঁধা না দিয়ে বোবা শয়তান সেজে বসে থাকে। মোস্ট প্রবাবলিএই ধরণের লোকগুলো মানুষকে খুশি করার জন্য নিজেও শ্বশুড়বাড়ি গিয়ে পায়ের ধূলা নেওয়ার জন্য অন্যের পায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এদেরকে ইসলাম শেখানো জরুরীএদের মূর্খতার কারণে পুরো সমাজে বিপর্যয় দেখা যাচ্ছেনিজে ইসলাম জানেনা – অন্যদের ইসলাম পালনে বাঁধা সৃষ্টি করে।

সমাজের লোকেরা পাপ কাজে লিপ্ত থাকলে যদি আযাব আসেসেটা কিন্তু ভালো-মন্দ সবাইকে স্পর্শ করে। তাই আমাদের মুসলমানদেরকে জমীন থেকে শিরক ও বেদাত উৎখাত করার জন্য ক্বুরান ও সুন্নাতের দাওয়াত ও তাবলীগে আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। যেই প্রসংগে কথাগুলো বলাঃ শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি আশা করলেই যে সব আশা পূরণ করতে হবে এমন নাহারাম কাজে তাদের কেনস্বামীর আদেশও মান্য করা যাবেনা। ইসলামের বিধান হচ্ছেঃ জায়েজ কাজে স্বামীর আনুগত্য করতে হবেযদিও সেটা কোনো স্ত্রীর ভালো না লাগে বা সে ঐ বিষয়ের সাথে একমত না হয়। কিন্তুস্বামী যদি এমন কোনো কথা বলেযা কুরআন ও সুন্নাহর বিপরীত তাহলে সেটা মানা যাবেনা।

আজকাল অনেক মুসলিম(!) পুরুষ তার স্ত্রী পর্দা করুক পছন্দ করেনাএই ব্যাপারে স্বামীর অনুগত্য করা চলবেনা। এ প্রসংগে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “খালিক (সৃষ্টিকর্তার) অবাধ্য হয়ে কোনো মাখলুকের (সৃষ্টির) আনুগত্য নেই।” মুসনাদে আহমাদ ও হাকিম। আর কেউ যদি মানুষকে খুশি করার জন্য আল্লাহর আদেশ অমান্য করে তাহলে তার পরিণতি সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি মানুষকে সন্তুষ্ট করার আল্লাহ তাআ’লাকে অসন্তুষ্ট করেতাহলে আল্লাহ তাআ’লা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। পরিণতিতে আল্লাহ তাআ’লাকে অসন্তুষ্ট করিয়া যাদেরকে সে সন্তুষ্ট করিয়াছিলতারাও অসন্তুষ্ট হয়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে মানুষকে অসন্তুষ্ট করেআল্লাহ তাআ’লা তার প্রতি সন্তুষ্ট হন এবং আল্লাহ তাআ’লাকে সন্তুষ্ট করার জন্যে যাহাদেরকে সে অসন্তুষ্ট করেছিলোতাদেরকেও আল্লাহ তাআ’লা সন্তুষ্ট করেন। সেই সব অসন্তুষ্ট লোকদের দৃষ্টিতে আল্লাহ তাআ’লা তাকে উত্তম করে দেনসেই ব্যাক্তির কথা ও কাজকে তাহাদের দৃষ্টিতে শোভণীয় করে দেন।” [সুনানে আত-তিরমিযী]

এই হাদিস টা বুঝার জন্য যতেষ্ট

حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ الرَّجُلُ مِنَّا يَلْقَى أَخَاهُ أَوْ صَدِيقَهُ أَيَنْحَنِي لَهُ قَالَ ‏”‏ لاَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَفَيَلْتَزِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ قَالَ ‏”‏ لاَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَفَيَأْخُذُ بِيَدِهِ وَيُصَافِحُهُ قَالَ ‏”‏ نَعَمْ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রা:)

তিনি বলেন কোন একসময় জনৈক ব্যক্তি প্রশ্ন করল হে আল্লাহর রাসুল ! আমাদের কোন ব্যক্তি তার ভাই কিংবা বন্ধুর সাথে দেখা করলে সে কি তার সামনে ঝুঁকে (নত) যাবেতিনি বললেনঃ না। সে আবার প্রশ্ন করন তাহলে কি সে গলাগলি করে তাকে চুমু খাবেতিনি বললেনঃ না। সে এবার বললতাহলে সে তার হাত ধরে মুসাফাহা (করমর্দন) করবেতিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (৩৭০২)।

জামে‘ আত-তিরমিজিহাদিস নং ২৭২৮

মন্তব্য লিখুন

আরও পড়ুন

ফেব্রুয়ারি ২৯ ২০২৪

আত্মজ্ঞানের ভূমিকা – ২

ফেব্রুয়ারি ২৯ ২০২৪

আত্মজ্ঞানের ভূমিকা – ১

ফেব্রুয়ারি ২৭ ২০২৪

Instant Writing Techniques 1

ফেব্রুয়ারি ২২ ২০২৪

আল-কোরআনের অজানা রহস্য – ২

ফেব্রুয়ারি ১৫ ২০২৪

আল-কুরআন এর অজানা রহস্য – ১