মুসলিমগণ জগতের জ্ঞানে একেবারেই আনাড়ি
সময়: ২৩ মার্চ ২০২০, ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
লেখক: এস.এম. জাকির হুসাইন।
উৎস: কোরানের রহস্যময় জগত
টপিক: ধর্ম ও ইসলাম, পরামর্শ ও সতর্কতা, বিশেষজ্ঞের মতামত, সঠিক মনোভাব
ট্যাগ: Featured
মুসলিমগণ জগতের জ্ঞানে একেবারেই আনাড়ি। অথচ জগতের যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে তাদের ই বেশি জ্ঞান থাকার কথা ছিল। মানুষ যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে জগতে প্রতিনিধি হয়ে থাকে তাহলে প্রতিনিধিকে অবশ্যই সে যার প্রতিনিধিত্ব করছে তার ব্যাপারে এবং যে জায়গায় সে প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছে সে জায়গার ব্যাপারেও জ্ঞান রাখতে হবে। অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুসলিমগণ কঠোর শ্রম অধ্যাবসায় জ্ঞানচর্চা ইত্যাদিকে ফাঁকি দিয়েই জান্নাতে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা জ্ঞানের সংজ্ঞা টাকে খুব ক্ষুদ্র করে ফেলেছি। জীবন থেকেই ধর্ম আলাদা নয়। ধর্ম থেকে জ্ঞান আলাদা নয়। জ্ঞান অর্জন কোন বাড়তি কাজ নয়। বরং তা একটি আবশ্যিক কাজ। কারণ বাবা আদমের (আ) শ্রেষ্ঠত্ব সবার কাছে প্রমাণ করা হয়েছিল তার জ্ঞানের মাপকাঠিতেই। সঠিকভাবে কোরআন অধ্যয়ন করতে গিয়েই কিন্তু তা স্বাভাবিকভাবেই এবং আবশ্যিকভাবেই করা হয়ে যেত। কিন্তু তা করা হয়নি। এবং এটা থেকে প্রমাণিত হয় যে কুরআনকে মুসলিমগণ ই অধিকাংশ ক্ষেত্রে পর্যাপ্তভাবে মর্যাদা দেয়নি।
আল্লাহ যে কাউকে তার মধ্যে ভাল কিছু দেখলে জান্নাতে দিতে পারেন – এটা তার নিজের ইচ্ছার ব্যাপার। কিন্তু যে কেউ ই নিজেকে তার প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছে, এই দাবি করতে পারেনা, যদি সে জ্ঞান চর্চার ওপর না থাকে। মানুষ সৃষ্টির অনেক আগেই ফেরেশতাগণ আল্লাহকে বলেছিলেন – কেন তুমি মানুষ সৃষ্টি করতে চাচ্ছ? আমরা কি তোমার তাসবীহ-তাহলীল করছি না? তখন তো আল্লাহ তাদেরকে বলতে পারতেন- ঠিক আছে, তোমরা যেহেতু আমার তাসবীহ-তাহলীল করছো সেতু আমার মানুষ সৃষ্টি করার কোন প্রয়োজন নেই। বরং তিনি বললেন উল্টো কথা – আমি যা জানি তোমরা তা জানো না। এ থেকে বোঝা যায় যে শুধু তাসবীহ-তাহলীল করা মানুষের ধর্মের শ্রেষ্ঠতম স্তর নয়। মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাসবিহ তাহলীল এর চেয়েও বড় কিছু করার জন্য, অর্থাৎ জীবনের মধ্যে ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কারণ আল্লাহ 30 নাম্বার সুরার 30 নাম্বার আয়াতে বলেছেন যে তিনি তার স্বভাব দিয়েই মানুষের স্বভাব কে সৃষ্টি করেছেন। এবং এটাই চিরন্তন ধর্ম। আমরা সচরাচর ধর্মের ভিত গুলোকে ধর্ম ভাবতে শিখে ফেলেছি। অথচ সেই ভিত বা স্তম্ভ গুলোর উপরে যে ভবনটি রয়েছে সে ব্যাপারে আমরা কোন খোঁজখবর নিতে চাই না। সেই ভবনটি হল সেই স্বভাব। নিয়মিত নামাজ কালাম রোজা ইত্যাদি আদায় করলে আল্লাহ চাইলে জান্নাতে যাওয়া যায়। যায় না তা বলা হচ্ছে না। কিন্তু শুধু সেই দায়িত্বটুকু পালন করে আল্লাহর সফল প্রতিনিধি হওয়া যায় না।
যদি আমরা বুঝতে শিখি যে আমাদের চিন্তায় ভুল রয়েছে তাহলে আমাদের ইমানে উন্নয়ন ঘটবে।