হঠাৎ ক’রে নতুন জীবন!
সময়: ০৪ জুলাই ২০১৮, ১১:১৪ অপরাহ্ণ
লেখক: বিভাগীয় সম্পাদক।
উৎস: ধ্যানের শক্তি ও নবজীবন, বাই- এস.এম. জাকির হুসাইন
টপিক: আধ্যাত্মিক জীবন, উন্নত চিন্তা, বুক রিভিউ
ট্যাগ: Featured
– ১ –
জীবনটাকে হঠাৎ ক’রে পাল্টে ফেলা যায়!
মুহুর্তের সিদ্ধান্তেই!
এবং রাতারাতি সচ্ছল ও সম্পদশালী হওয়া যায়।
কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই!
প্রমাণ এই বইটি।
প্রকাশ্যভাবে ব’লে রাখা ভালো- এই বইটি আমি লিখেছি নিজেই ধনী হওয়ার জন্য। আর্থিক, মানসিক, শারিরীক, সামাজিক, এবং বুদ্ধিবৃত্তিক- সব অর্থে। লিখতে লিখতেই তার ফল পেয়েছি। তা আরেকবার প্রমাণিত হবে বইটি প্রকাশিত হবার পর, ইনশাল্লাহ। এ কারণে ভেবেচিলাম বইটির নাম দেব ‘ধ্যান ক’রে ধনী হওয়া’। কিন্তু ‘ধন’ শব্দটির অর্থ এক-এক জনের কাছে এক-এক রকম হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা ঢালাওভাবে একপেশে ইঙ্গিত পাবে আশংকায় বর্তমান নামটি নির্বাচন করেছি। আমাদের ধনের বড় অভাব। কারণ, প্রধাণত, আমরা ‘ধ্যানী’ নই। যা কিছু ধন আমাদের আছে, তার বিপরীতে আছে সমপরিমাণ দারিদ্র- কারণ… কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের ধন থাকলেও আমরা নিজেদেরকে ধনী মনে করি না। সুতরাং আমরা যদি ধ্যানের গোপন সুড়ঙ্গ পথটিকে চিনে ফেলতে পারি, তাহলে প্রত্যেকেই অনায়াসে পেয়ে যেতে পারি অমূল্য রত্নরাজির সন্ধান। এই ধ্যানের উপায়টি জানতে পারলে আমরা যেমন আক্ষরিক অর্থে ধনী হতে পারব, তেমনই হতে পারব সুস্থ মন, শক্তিসালী মেধা, তুখোড় আবেগের যোগ্যতা এবং আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। ব্যক্তিগত জীবনে দুশ্চিন্তাহীন এবং সুখী হবার ক্ষেত্রে এই বইটিতে উপস্থাপিত ধ্যানের কোনো বিকল্প নেই।
– ২ –
অভাবে স্বভাব নষ্ট।
ইমান নষ্ট।
ফলে মুসলমানিত্ব নষ্ট।
রসূল (স:) বলেছিলেন যে, দারিদ্র কুফরির কারণ হতে পারে।
আল্লাহ নিজেই পবিত্র কুরআনে আমাদেরকে তার কাছে স্বচ্ছলতার জন্য প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন।
হযরত আলী (রা:) বলেছেন- যে মুসলমানের জন্য স্বচ্ছলতা অত্যন্ত দরকারি, এর অভাবেই তার স্বভাব নষ্ট হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে মুসলমানেরা জামাতে নামাজ পড়ে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জামাতে জীবন-যাপন করে না। ফলে ব্যর্থ হয় নামাজের উদ্দেশ্য। দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত মানুষ দিনের চব্বিশ ঘন্টা পেটের চিন্তায় ব্যস্ত। পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। ফলত ধর্ম সমাজ সত্য সৌন্দর্য ভালোবাসা ভ্রাতৃত্ব নিয়ে ভাববার সময় দাতের নেই। এ অবস্থায় তাদেরকে স্বচ্ছলতার আশু পথটি না দেখিয়ে শুধু ‘ধর্মের বাণী’ শোনালে কোনো লাভ হবে না। তাতে তাদের নফ্স বিরোধী হয়ে উঠবে সত্যের প্রতি, সত্যকে ভালোবাসা তো দূরের কথা। বাস্তবে কি তাই হচ্ছে না? সুতরাং আগে পেটের ফয়সালা হওয়া চাই।
এবং মুহুর্তের সিদ্ধান্তেই তা সম্ভব!
আমি চ্যালেঞ্জ করছি। যার ইচ্ছা তিনি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারেন।
– ৩ –
আমার পাঠকগণ যদি অবাক হতে পেরে থাকেন, তাহলে সেটিই হবে আমার জন্য সুখের সংবাদ। আমরা অনেকেই ভোঁতা হয়ে গেছি। সত্যকে যেন আমরা সবাই জেনে ফেলেছি। এ কারণে এখন আমরা অনেকেই সুন্দর কথা শোনে অবাক হইনা। ফলে সৌন্দর্য তার গুরুত্ব হারায়। আমি আলোচনা- মুখর দর্শনের এবং তত্ত্বকথার মঞ্চ থেকে নিচে নেমে এসেই জীবনের- ব্যক্তিগতভাবে আমার জীবনের এবং সমষ্টিগতভাবে জাতীয় জীবনের- একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে চাই। তা হলো- নিজে ধনী হওয়া এবং অন্যান্য বিশ্বাসীদেরকে ধনী হওয়ার পথ দেখানো।
আমরা এতকাল শুধু ইবাদতের বেহেস্ত-দোযখের রাতজাগার আর ফজরের নামাজ প’ড়ে নূরের আলোয় মুখকে উজ্জল করার মারেফত শিখেছি, দারিদ্রের মারেফত শিখিনি। সচ্ছলতার অভাবে আমরা যে উজ্জল মুখেও মোনাফেকি কথা বলছি এবং দারিদ্রের কষাঘাতে আসল কর্তব্য ও স্বভাব থেকে চুপিসারে স’রে পড়ছি, তা অবশ্যই সুখের সংবাদ নয়। অথচ দারিদ্রের মারেফত এমন জিনিস যা জানলে এবং নিজের জীবনে যা মুহুর্তের সিদ্ধান্তে সফলভাবে প্রয়োগ করতে পারলে আল্লাহকে (বা বেহেস্ত) পাবার জন্য আর অন্য কোনো রহস্য জানার প্রয়োজন হয় না।
যাদের আর্থিক অভাব অনটন নেই, এই রহস্য জানা তাদেরই বেশি উচিৎ। কারণ তাদের যেহেতু অর্থের প্রয়োজন নেই, সেহেতু তারা এর মাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানতে পারবেন কেন আল্লাহ তাদেরকে ধনী বানিয়েছেন এবং এভাবে তারা নিজেদের সম্বন্ধে এমন কিছু জানবেন যার পথ ধ’রে আল্লাহকে পাওয়া তাদের জন্য সহজ হবে।
সামান্য ধ্যানে এবং মুহুর্তের সিদ্ধান্তে কারো জীবন পাল্টে যাবে – যারা এখন জানেননি জীবনটা কী তারা তা জানতে পারবেন; এবং কারো মৃত্যু পাল্টে যাবে- যারা জীবনটাকে চমৎকারভাবে পেয়েছেন ব’লে মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত, তাদের মৃত্যুভয় মুছে যাবে।
– ৪ –
আল্লাহ প্রত্যেক মানুষের কর্মফল ও ভাগ্যকে তার গর্দানের (ঘাড়ের) সাথে লটকিয়ে দিয়েছেন। কথাটির বিভিন্ন অর্থ হতে পারে।:
এক. ভাগ্যকে সবার বহন করতেই হবে।
দুই. ঘাড়ের সাথে লাগানো আছে কী? মাথা। সুতরাং যার মাথা (চিন্তা-ভাবনা, নিয়ত বা উদ্দেশ্য, যোগ্যতা) তাকে যেদিকে চালিত করবে, সেদিকেই তার ভাগ্য।
তিন. ঘাড়ের সাথে লাগানো মাথাটাকে আত্মসমর্পণে নত ক’রে ভাগ্যকে পাল্টানো যায়।